বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। ফেরি চলাচলের এই সাময়িক স্থগিতাদেশের কারণ হিসেবে চ্যানেলে নাব্য সংকট চিহ্নিত করা হয়েছে। জানা গেছে, অ্যাপ্রোচ চ্যানেলে পলি জমে নদীর গভীরতা কমে যাওয়ায় ফেরি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে, যার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রনি জানান, “এটি দুর্ঘটনা এড়াতে করা হয়েছে, কারণ নদীর গভীরতা বর্তমানে ফেরি চলাচলের জন্য যথেষ্ট নয়। আমরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ফেরি চলাচল বন্ধ রেখেছি।” বর্তমান পরিস্থিতিতে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায়, উভয় পাড়ে পণ্যবাহী ট্রাক আটকে পড়েছে এবং হাজার হাজার যাত্রী ও চালক সমস্যায় পড়েছেন।
আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটের উপর নির্ভরশীল হাজার হাজার যাত্রী এবং ব্যবসায়ী এই নৌপথের মাধ্যমে তাদের গন্তব্যে পৌঁছান। ফেরি বন্ধ থাকার কারণে, প্রায় ৩০০-৩৫০টি পণ্যবাহী ট্রাক আটকে পড়েছে, যা খাদ্য, কৃষিপণ্য এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মালামাল পরিবহনে সমস্যার সৃষ্টি করেছে। এর ফলে স্থানীয় অর্থনীতি এবং ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের দুর্ভোগে পড়েছেন।
বিআইডব্লিউটিসির ডিজিএম নাসির মোহাম্মদ চৌধুরী জানিয়েছেন, “এই রুটে বর্তমানে পাঁচটি ফেরি চলাচল করছে। কিন্তু চ্যানেলে পর্যাপ্ত নাব্য না থাকায় ফেরি চলাচল সম্ভব হচ্ছিল না।”
এটি চলতি মাসে তৃতীয়বারের মতো যখন এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হলো। এর আগে ২০২৪ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে একাধিক বার নাব্য সংকটের কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়েছিল। বারবার এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই সাথে, যাত্রীদের জন্যও এই পরিস্থিতি অতিরিক্ত ভোগান্তির কারণ হচ্ছে।
ফেরি চলাচল বন্ধ থাকলেও, বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ঘাটে আটকে থাকা যানবাহনগুলো সড়ক পথে চলাচলের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যদিও তা অনেকটাই সময়সাপেক্ষ এবং যাত্রীদের জন্য কষ্টকর।
বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফেরি চলাচল পুনরায় শুরু করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দ্রুত নেওয়া হবে। চ্যানেলের নাব্য সংকট দূর করতে পর্যাপ্ত পানি বৃদ্ধি ও পলি পরিষ্কার করার কাজ শুরু করা হবে। তবে, তা কখনোই অল্প সময়ের মধ্যে সমাধান হতে পারে না, কারণ নদী খননের কাজ দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া।
এই পরিস্থিতির দ্রুত সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাজ করছে এবং শিগগিরই ফেরি চলাচল শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তথ্য সুত্র ঃ ঢাকা ট্রিবিউন